আপনি কি ভবিষ্যতে মেডিকেলে পড়তে চান? উত্তর যদি হয় হ্যাঁ, তাহলে পোস্টটি অবশ্যই আপনার জন্য। আজকাল অনেকের স্বপ্নই মেডিকেল। অবশ্যই মেডিকেল একটি ভালো সেক্টর হওয়ার কারণে মেডিকেলের চাহিদা এতটাই বেশি। তবে সবাই কি মেডিকেলে চান্স পায়? অবশ্যই না।তবে যদি শুরু থেকেই কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস মেইনটেইন করা হয় তাহলে মেডিকেলে অবশ্যই ভালো কিছু করা যেতে পারে। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস দেওয়া হলঃ
১. রেজাল্ট অবশ্যই ভালো করতে হবেঃ
মেডিকেল এডমিশন টেস্টে প্রতি বছর হাজার হাজার শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেয়। কিন্তু সরকারি বেসরকারি ডেন্টাল সব মিলিয়ে চান্স পায় খুবই কম সংখ্যক পরীক্ষার্থী।আর যারা পরীক্ষা দিবে তারা অধিকাংশই দুটি এ প্লাস পাওয়া।তাই প্রচন্ড এই প্রতিযোগিতামূলক এডমিশন টেস্টে নিজের দক্ষতা প্রমাণের জন্য হলেও স্কুল কলেজ জীবন থেকে পড়াশোনার প্রতি যত্নশীল এবং পরিশ্রমী হতে হবে। আমরা অনেক সময় কিছু ব্যতিক্রম ছাত্র-ছাত্রীদের দেখি যারা কোন এ প্লাস না পাওয়া সত্ত্বেও ভালো মার্ক উঠায় এবং মেডিকেলে চান্স পেয়ে যায়। কিন্তু ব্যতিক্রম কখনো উদাহরণ হতে পারে না। তাই স্কুল কলেজ জীবন থেকে সচেতনতার সাথে নিজের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হবে।
২. পড়াশোনাকে মন থেকে মেনে নাওঃ
একজন চিকিৎসক হতে হলে তোমাকে অবশ্যই পড়াশোনা খুব ভালো করে করতে হবে। তাই পড়াশোনা কে বোঝা মনে না করে বুঝিয়ে বুঝে বুঝে পড়ার চেষ্টা করা উচিৎ। পড়াশোনাকে চাপ কিংবা চিন্তার বিষয় মনে করবে না কখনোই।পড়াশোনার মাঝে আনন্দ খুঁজে নাও।
৩. পড়াশোনা শুধু পরীক্ষা পাশের জন্য নয়ঃ
যারা এ প্লাস পায় তারাই শুধু ভালো স্টুডেন্ট নয় বরং যারা নিজের পড়াটাকে বুঝে পড়ে এবং যা সে পড়ছে তা সে ভালো করে জানে সেই কেবল ভালো স্টুডেন্ট। মেডিকেলের প্রথম দুই বছর পড়াশোনাটা বেশ মজা লাগবে তারই যে স্কুল কলেজে বায়োলজি এবং কেমিস্ট্রি ভালোভাবে পড়বে। আসলে স্কুল কলেজ জীবনের পড়াশোনাটা বেসিক।আর এই বেসিকটা যদি তুমি না জানো তাহলে মেডিকেলের পড়া বোঝা তোমার জন্য অত্যন্ত কঠিন হয়ে যাবে।
৪. মানব দেহ চ্যাপ্টারটা খুব ভালোভাবে পড়োঃ
আমরা অনেকেই মানবদেহ চ্যাপ্টারটা ভয় পেয়ে পড়ি না বা কম পড়ি। অথচ এই মানবদেহে চ্যাপ্টারই মেডিকেলের প্রথম দুই বছরের এনাটমি সাবজেক্ট এর বেসিক। তাই মানব দেহ চ্যাপ্টারটা অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে পড়ো। তাহলে মেডিকেল এ্যানাটমী এর মত কঠিন সাবজেক্ট টা ধরতে তোমার সহজ হবে।
৫. যা পড়ছো তা বলার অভ্যাস করঃ
মেডিকেল লাইফে ভাইভা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ভাইভাতে পাস করাও সহজ নয়। সেখানে যা প্রশ্ন করা হবে তা মুখে বলতে হয় এবং নিঃসংকোচে ও নির্ভয়। তাই স্কুল কলেজ জীবন থেকে চর্চা কর যেন যা তুমি পড়ছো তা তুমি বলতে পারো। এতে করে যদি তোমার বলার কোন জড়তা থাকে তাহলে তা কেটে যাবে।
৬. ইংরেজি টার্মগুলোর প্রতি গুরুত্ব দাওঃ
তোমরা হয়তো লক্ষ্য করেছ বায়োলজি এবং কেমিস্ট্রি বইয়ে বাংলা শব্দের পাশে ইংরেজি টার্ম লেখা থাকে।যা আমরা অনেকেই পড়ি না কিন্তু এটা করা মোটেও ঠিক হবে না। কারণ মেডিকেলের পড়াশোনাটা পুরোটাই ইংরেজিতে কোন বাংলা শব্দের ব্যবহার এখানে নেই।
৭. ফাঁকিবাজিটা এখন রাখোঃ
মেডিকেলে প্রচুর পড়ার চাপ। সেখানে পড়াশোনাটা নিয়মিতই করতে হয়। তাই যারা নিয়মিত পড়াশোনা না করে পরীক্ষার আগে পড়া শুরু করে তাদের জন্য মেডিকেল নয়।
৮. চুপচাপ থাকার অভ্যাসটা ত্যাগ করতে হবেঃ
অনেকেই খুব চুপচাপ আবার কথা বলার অভ্যাস তাও কম। অবশ্যই এটা খারাপ কোন দিক না। তবে একজন চিকিৎসকের জন্য এটি মোটেও কোন ভালো বিষয় না। কারণ একজন চিকিৎসককে দিনে অনেক রোগী দেখতে হয় তাদের ফলোআপ করতে হয়। রোগীর সাথে কথা বলতে হয়।এজন্যে চুপচাপ থাকার অভ্যাসটা বাদ দিতে হবে।
৯. অত্যন্ত পরিশ্রমী হয়ে উঠতে হবেঃ
মেডিকেলে ভালো করার প্রথম এবং প্রধান উপায় হচ্ছে কঠোর পরিশ্রম। এখানে যে বেশি পরিশ্রম করবে সেই সফলতা অর্জন করবে। ‘আমাকে একজন ভালো ডাক্তার হতে হলে অবশ্যই কষ্ট করতে হবে’- এমন মানসিকতা রাখতে শেখো।
-আর হ্যাঁ, ব্যবহারিক কাজে দক্ষতা থাকা মেডিকেলের জন্য খুবই প্রয়োজন।
সবচেয়ে বড় কথা তোমার বাবা-মা তোমার জন্য বুক ভরা আশা নিয়ে বসে আছেন যে ওনারা তোমাকে একজন ডাক্তার হতে দেখবেন। একবার ভেবে দেখো তো ছোট থেকে তুমি যা চেয়েছো তা পেয়েছ কিনা? অবশ্যই হ্যাঁ। তুমি যখন সবকিছুই তোমার বাবা-মার কাছ থেকে পেয়েছো তখন তুমি কেন তাদের আশাটা পূরণ করবে না? তারা তো তোমার কাছ থেকে বেশি কিছু চাননি তুমি শুধু একজন ডাক্তার হও সেটাই তারা চেয়েছেন।
খেয়াল রেখো যেন তোমার সামান্য অসচেতনতার কারণে তোমার এবং তোমার বাবা মায়ের স্বপ্নটা ভেঙে না যায়। তাই অত্যন্ত কঠোর পরিশ্রম করো। দেখবে জীবনটা অনেক সুন্দর।
সবশেষে,,,,, ভবিষ্যত চিকিৎসকদের জন্য শুভকামনা। Best of luck………